বোবা মেয়ের প্রেমে 💗

 # বোবা মেয়ের প্রেমে 💗

# লেখকঃ  শাকিল হোসেন

# পর্বঃ ৬ষ্ঠ


আমিঃ বলো কি বলবে?(বিরক্ত হয়ে)


রিয়াঃ কীভাবে যে বলি।


আমিঃ আজব তো এখানে লজ্জা পাওয়ার কি আছে?


রিয়াঃ আসলে সাহিদ আমি তোমাকে ভালবাসি।


রিয়ার কথা শুনে তো আমি অবাক হয়ে গেলাম।এই মেয়ে বলে কী?


আমিঃ দেখো রিয়া আমি সামিয়া কে ভালোবাসি।এটা তুমি সহ কলেজের প্রায়

 সবাই জানে।আর সামিয়া কে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।


রিয়াঃ সামিয়ার মধ্যে এমন কি আছে যা আমার মধ্যে নেই। বরং সামিয়া তো কথা বলতে পারেনা।

আমি তো কথা বলতে পারি।


আমিঃ এসব বাদ দেও। আমার পক্ষে সম্ভব নয়।


রিয়াঃ কেন সম্ভব নয়।সে  তো বোবা , তোমাকে ভালোভাবে ডাকতে পারবেনা কথা বলতে

পারবেনা।তুমি চাইলে ওর সাথে ব্রেকআপ করে আমাকে ভালোবাসতে পারবো।


রিয়ার কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে গেল।

আমিঃ ঠাসসসস ঠাসসস,,,, তোকে বার বার বলতেছি সামিয়া কে ছাড়া অন্য কাউকে 

ভালোবাসা আমার পক্ষে সম্ভব নয় কথা কানে যায় না। আবার বলতেছিস ব্রেকআপ করার কথা।

 

বলেই আরেকটা লাগিয়ে দিলাম।এই চড়টা একটু জোরে হওয়ায় ঠোঁট কেটে গেছে। ‌সেদিকে লক্ষ্য না করে ব

বললামঃ আর যেন তোকে আমার সামনে না দেখি।( রেগে)

বলেই আমি চলে আসলাম।


আর রিয়া সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে বললঃ তুমি একটা বোবা মেয়ের জন্য চড় 

মারলে । ঠিক আছে,আমিও ঐ মেয়েকে তোমার জীবন থেকে সরিয়ে ফেলবো।


আমিঃ পারলে সরিয়ে দেখা।


আমি এসে আবার আড্ডায় যোগ দিলাম।

রাফি বললঃ কীরে কি ডেকেছিলো?


আমি সব বলে দিলাম। আমার কথা শুনে সামিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল।

আমি ওর মাথায় হিম বুলিয়ে দিয়ে বললামঃ পাখি তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।

তারপরেও কান্না করিয়ে যাচ্ছে।


সিফাতঃ সাহিদ এখন থেকে তুই সবসময় সামিয়া কে দেখে রাখবি। কারণ, ঐ মেয়ে

কখন কি করে তা বলা যাবে না।


নিলাঃ হ্যাঁ ভাইয়া সিফাত ঠিক বলেছে।


আমিঃ আচ্ছা। তিশা তুই এখন বাসায় যাবি?


তিশাঃ হ্যাঁ চল।


আমিঃ দোস তোরা থাক আমি এদের কে নিয়ে বাসায় যায়।


রাফি আর সিফাতঃ ঠিক আছে যা।


তিশা আর সামিয়া কে বাইকে উঠে নিলাম। তিশাকে বাসায় নেমে 

দিয়ে সামিয়া কে নিয়ে গেলাম একটা পার্কে।যাতে করে মনটা ফুরফুরে হয়ে।


পার্কে যায়ে দুজনে একটা বেঞ্চে বসলাম। একটু পরে পাশ দিয়ে একটা বাদামওয়ালা

যাচ্ছে।তার কাছ থেকে বাদাম নিলাম।আমি বাদামে খোসা(উপরের অংশ) ছড়িয়ে দিচ্ছি

সামিয়ার মুখে দিচ্ছি আর সামিয়া খাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সামিয়ার আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।

আমার মাঝে এক অন্যরকমের অনুভূতি কাজ করতেছে।


যাইহোক, কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে সামিয়া কে ওর বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসলাম। বাসায় এসে

গোসল করে নামাজ পড়লাম। একটু পরে তিশা এসে লাঞ্চ করার জন্য ডেকে গেল। লাঞ্চ করে কিছুক্ষণ

আড্ডা দিয়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে গেলাম।


সন্ধ্যায় তিশার ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম। ফ্রেশ হয়ে বাহিরে গেলাম বন্ধুদের সাথে

আড্ডা দেওয়া জন্য। আড্ডা দিয়ে বাসায় এসে লেখাপড়া করে ডিনার করতে গেলাম।

ডিনার করে রুমে এসে ফেসবুক লগইন করে একটু ঘুরাঘুরি করে ঘুমিয়ে গেলাম।


ফজরে উঠে নামাজ পড়ে হাঁটাহাঁটি করে নাস্তা করে তিশা কে নিয়ে কলেজে গেলাম।

আজকে কলেজে যায়ে দেখি সামিয়া আসেনি। মনে করলাম পরে আসবে। ক্লাস শেষ করে বাহিরে এসে দেখি

তিশা একাই দাঁড়িয়ে আছে। তারমানে সামিয়া আসেনি।মনের মধ্যে হাজারো চিন্তা ঢুকে গেল।


তিশাকে বললামঃ তিশা সামিয়া আজকে আসেনি।


তিশাঃ সামিয়া নাকো অসুস্থ।


আমিঃ কি হয়েছে?


তিশাঃ জ্বর আর মাথা ব্যথা।


আমিঃ ওওও (স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে) তুই যাবি ওর বাসায়।


তিশাঃ হ্যাঁ চল।


তারপরে রাফি আর সিফাত কে বলে তিশা কে নিয়ে সামিয়ার বাসায় আসলাম।

কলিং বেল বাজাতেই আংকেল(সামিয়ার আব্বু) এসে দরজা খুলে দিল।


আমিঃ আসসালামুয়ালাইকুম। আংকেল কেমন আছেন?


আংকেলঃ আলহামদুলিল্লাহ। বাবা তুমি কেমন আছো আর তিশা মা তুমি কেমন আছো?


আমি আর তিশাঃ আলহামদুলিল্লাহ আংকেল।


তিশাঃ আংকেল সামিয়া কোথায়? ওর নাকি জ্বর এসেছে।


আংকেলঃ হ্যাঁ মা মেয়েটার হঠাৎ করে জ্বর আর মাথা ব্যথা।রুমে বসে আছে যাও তোমরা,

আমি নাস্তার ব্যবস্থা করি।


আমিঃ আচ্ছা আংকেল।


আমি আর তিশা রুমে যায়ে দেখি মেডাম কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে।আমরা

যে এসেছি তা খেয়াল করেনি।

আমি যায়ে সামিয়ার পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই চোখ খুললো ।

 আমাকে দেখার সাথে সাথে জড়িয়ে ধরলো।


আমি ওর কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে বললামঃ এই পাগলি কী হয়েছে।দেখো আমি এসেছি।

মেডিসিন ঠিক মতো খেয়েছো?


সামিয়া মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললো।


তিশাঃ কি খবর ভাবি আমাকে ভুলে গেলে নাকি?


সামিয়া এতোক্ষণ তিশাকে দেখতে পায়নি।কারণ, 

তিশা আমার পেছনে সোফায় বসে ছিলো।


সামিয়া তিশাকে দেখে মুখটা ফিরিয়ে নিলো। বুঝতে পারলাম রাগ করেছে।


তিশা বুঝতে পারে বললঃ দেখ ভাবি আমি আসতে পারিনি এজন্য সরি।আর দেখ

তোর জন্য আমি কতো বড় একটা সারপ্রাইজ (আমাকে উদ্দেশ্য করে) নিয়ে এসেছি।

তা না হলে। এতো সুন্দর আদর পাইতি😜😜।


 তিশার কথা শুনে সামিয়া ফিক করে হেসে দিল।আরো কিছুক্ষণ কথা বলে। আংকেল এসে

খাবার জন্য নিচে ডেকে গেল।


তিনজন নিচে যায়ে আংকেল সহ একসাথে নাস্তা করলাম। নাস্তা করে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

দুদিন পরে সামিয়া পুরোপুরি সুস্থ হলো।


দেখতে দেখতে আমার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল। আল্লাহর রহমতে পরীক্ষা গুলো ভালোভাবে শেষ

হলো। রেজাল্ট ও ভালো হলো।

সামিয়া আর তিশা এবার অনার্স তৃতীয় বর্ষে।তারা দুজনে ভালোই রেজাল্ট করেছে।

আমি এখন বাবার ব্যবসা দেখা শুনা করবো।


বাসায় সকলে একসাথে ডিনার করতেছি তখন বাবা বললোঃ সাহিদ লেখাপড়া তো শেষ এবার আমার ব্যবসাটা দেখা শুনা করো।


আমিঃ আচ্ছা আব্বু।


আম্মুঃ সবই তো হলো শুধু আমার জন্য ,,,,,,,


***কেমন হচ্ছে তা কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ**""


No comments