পরকীয়া প্রেম
পরকীয়া প্রেম
Written by :---হৃদয়ের ধ্রুবতারা
Part. :--- 31
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
আর কিছু না ভেবেই শিশির কে কল দেয় ...!!
স্পর্শ কল দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছেনা!
কিছু সময় পরে কলটা রিসিভ হলো,
কিন্তু কন্ঠটা শুনতে পেলো কোনো পুরুষের,
স্পর্শ কলটা কেটে দিলো বুঝতে পারলো এটা শিশিরের স্বামীর কন্ঠ!
স্পর্শ আর কল দেয়নি শিশিরের নাম্বারে,
প্রতিদিনের মত স্পর্শ কলেজ আর পড়া লেখা নিয়ে ব্যাস্ত কারন তার আর পরীক্ষার বেশি দেরি নেই!
নিজেকে পড়ার মাঝেই বেশি ব্যস্ত রাখে।
হীর মনিও যতটা পারে স্পর্শের থেকে একটা দূরত্ব বজায় রেখে চলে,
কিন্তু চাইলেই কি আর সব হয়, হয় না হীরা মনি পারেনা স্পর্শের কাছ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে কারন ভালোবাসায় যত ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হোক না কেনো ভালোবাসা শুধু ভালোবাসাকেই কাছে টানে! দূরত্ব যতই হোক ভালোবাসার কাছে সে দূরত্ব কিছুই না!
হীরা মনি প্রতিদিন স্পর্শের রুমে গিয়ে তার রুমটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে গুছিয়ে রাখে,
হীরা মনি স্পর্শের টেবিলের উপর একটা ডায়েরি দেখতে পায়, ডায়েরির কভারটা খুব সুন্দর দেখার মত একটা ডায়েরি,
ডায়েরিটা হাতে নিয়ে ডায়েরিটা ছুয়ে হাতের পরশ বুলিয়ে দিলো,
ডায়েরিটা খুলে দেখতে চাইলো,
কিন্তু কি মনে করে আবার রেখে দিলো।
কারো অনুমতি ছাড়া কারো ডায়েরিতে হাত দেয়ে ঠিক না এই ভেবেই ডায়েরিটা রেখে দিলো,
একটা সাদা কাগজ নিয়ে কিছু একটা লিখে রেখে দিলো !!
স্পর্শ প্রতিদিন কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখে তার রুমটা বেশ গোছানো,
টেবিলের উপর একটা ফুল দানি খুব সুন্দর ফুলদানিটা, ফুলদানিতে কিছু রজনীগন্ধা আর দুটি গোলাপ রাখা আছে, স্পর্শের রজনীগন্ধা খুব প্রিয়
কে রেখেছে এই ফুল,
ফুলদানিটা সরাতেই একটা কাগজ দেখতে পেলো
স্পর্শ কাগজটি হাতে নিয়ে দেখে একটা চিঠি .....
স্পর্শ,,,,
হৃদয়ের ভাষা বুঝতে সুন্দর একটা হৃদয়ের প্রয়োজন হয় তোমার ঐ হৃদয়টা আমার বড় প্রয়োজন, তুমি আমার হবে কিনা আমি জানি না তবে আমি আশা করি, আমি কল্পনা করি, আমি স্বপ্ন দেখি, আমি ভাবি তুমি শুধু তুমি, আমার তুমি।
বিশ্বাস করো কতটা ভালোবাসি সেটা আমি তোমাকে বোঝাতে পারবো না কিন্তু আমার প্রতিটি নিশ্বাস আর বিশ্বাস তোমার কথায় বলে!!
প্রেমের বানী চিরন্তন সত্য,
ভালোবাসা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল,
এই দুটি কথায় আমার কাছে অতি আপন আর প্রিয়, আর এই প্রিয় থেকেই তোমাকে আমি আমার আত্মার সাথে মিসিয়ে নিয়েছি!!
ভালোবাসা পাবো কিনা জানি না,
তাই বলেকি ভালোবাসতে পারবো না,
তুমি আমাকে যতটাই আঘাত করো আমি কিছুই মনে করি না, কারন তোমার আঘাত গুলো আমি ভালোবাসা মনে করেই আমি আমার হার্টে রেখেছি, আমার বিশ্বাস আমার হার্ট তুমি হবেই হবে
আমার ভালোবাসা তুমি হবেই হবে!!
প্রিয় তুমি আজ তোমাকে একটা কথা বলি
তোমার আমার দূরত্ব যতই হোক আছি কিন্তু কাছাকাছি ....!!
আমি আজ চাঁদ দেখেছি
তবে সে চাঁদ আকাশের চাঁদের সাথে মেলে না
আমি আজ আলো দেখেছি
সে আলো পূর্নিমার আলোর সাথে মেলা না
আমার সে চাঁদ তুমি
আমার সে আলোও তুমি
তোমার তুমিতেই আমার আমিকে ফিরে পাই
হৃদয়ের আবেগ আর অনুভূতিতে,,
তুমি বলো,
তুমি হারাবে কোথায়
প্রেমের স্পর্শে তোমাকে যে আমি ছুঁয়ে যায়
কোথায় হারাবে তুমি বলো
আমার ভালোবাসা তোমার চারপাশে
ভালোবাসার স্পর্শ আর অনুভূতি খুঁজে দেখো
পেয়ে যাবে আমার অস্তিত্ব!!
কি ভাবছো তুমি,
এতো ভেবোনা, ভাবনা গুলো তোমার এলোমেলো
আমি চাইনা এলোমেলো হোক
আমার স্বপ্ন, আমার আশা, আমার ভালোবাসা
আমি তোমার হয়ে থাকতে চাই
তোমারই তুমিতে,
তোমারই অস্তিত্বে,
এই যে দেখো আমি এখানে
যেখানে তোমার হার্ট প্রতিনিয়তই
উঠানামা করে
একটু হাত রাখো তোমার বুকের বাম পাশে
দেখো আমি আছিতো,
তোমার অনুভূতি গুলোই জানিয়ে দেবে
আমার উপস্থিতি,
এরপর ও কি তুমি অস্বীকার করবে
আমার ভালোবাসা,
পারবে না তুমি, জিতে যাবো আমি
জিতে যাবে আমার ভালোবাসা
শুধু হেরে যাবে তুমি আমার ভালোবাসার কাছে
আসতেই হবে তোমাকে
আসতেই হবে আমার ভালোবাসার কাছে
আমিযে হৃদয় দিয়েই এখনো ভালোবাসি !!
ইতি, হীরা মনি!!
স্পর্শ নিজের হাতটা নিজের অজান্তেই বুকের বাম পাশে তুলে দেয়,
দুচোখ বন্ধ করে অনুভব করে ভালোবাসা,
মূর্তেই চোখ আবার মেলে এটা কি করে সম্ভব আবারও চোখ বুঝে,
না এবারও একই দৃশ্য হীরা মনি
তা হলে কি হীরা মনি তার হার্ট জুড়ে নিয়েছে,
কিন্তু যে হার্টে শিশির ছিলো সে হার্ট হীরা মনি দখল করে কি করে ভালোবাসা তা হলে কি ....?
একজনের জন্য হৃদয় নিমিষেই কি করে আরেক জনের হয়ে যায়!
না না এটা হতে পারেনা,
এ হৃদয়েতো শুধু শিশিরের বসবাস,
কিন্তু এটাও কি করে হবে যদি হৃদয়টা শিশিরের হয় তবে ভালোবাসাটাও শিশিরের হবে, কিন্তু সেটা হলোনা কেনো শিশিরের যায়গা হীরা মনি দখল করে নিলো কি করে, তার মনে শিশিরের দূরত্বই তার ভালোবাসার দূরত্বটা বাড়িয়ে দিয়েছে,,
ভালোবাসা তা হলে কি এমনি দূরে গেলেই দূরত্ব আর কাছে আসলেই আপন,
না না না এটা ভালোবাসা হতে পারেনা,
সত্যি কারের ভালোবাসা কখনোই দূরত্বে হারিয়ে যায় না ভালোবাসা সব সময়ই ভালোবাসা হয়ে থাকে মাঝে শুধু ভালোলাগা গুলো পরিবর্তন হয়ে হার্ট বদলে যায় আর ভালোলাগা গুলোই এক একজনের উপর ভালোবাসার প্রভাব বিস্তার করে আর এভাবেই অতি প্রিয় আপন মানুষটাও এক সময় পর হয়ে যায়,, মনের পরিবর্তন হলে ভালোবাসার ও পরিবর্তন ঘটে।
এসব ভাবতে ভাবতেই কোথায় যেনো হারিয়ে যায় স্পর্শ
তার ফোনটা বেজে উঠলো,
ফোনটা বের করে হাতে নিয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে নাম্বারটা দেখে তার হার্ট বিট বেড়ে যায়!
প্রায় একমাস পরে শিশিরের ফোন থেকে কল আসে স্পর্শের ফোনে
স্পর্শ ফোনটি রিসিভ করে
ফোনের ওপাশ থেকে যে কন্ঠ সে শুনেছে এ কন্ঠ তার খুবই পরিচিত এটা কি করে সে ভুলে যাবে এটা যে তার প্রিয় একটা মানুষ যে মানুষটা আজ একমাস আগে হারিয়ে গেছে!
শিশির : হ্যালো স্পর্শ হ্যালো আমাকে কি শুনতে পাচ্ছো প্লীজ কথা বলো আমার সাথে
স্পর্শ : হ্যাঁ বলো আমি শুনতে পাচ্ছি
শিশির : ভেজা ভেজা কন্ঠে কেমন আছো তুমি
স্পর্শ : তুমি যেমনটি রেখেছো
শিশির : আমি জানি আমি তোমাকে ভালো রাখতে পারিনি সে জন্য আমি দুঃখিত ভালোবাসো এখনও আমায়,
স্পর্শ কি বলবে ভেবে পায় না চুপচাপ থাকে
শিশির : কিছু বলো স্পর্শ চুপ করে থেকো না
স্পর্শ : কি বলবো
শিশির : ভালোবাসো আমায়
স্পর্শ : হ্যাঁ বাসিতো
শিশির : তা হলে এখনই আমাদের পুরোনো যায়গায় দেখা করো তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে যে কথা গুলো না বললে আমি যে সস্তির নিশ্বাস নিতে পারছি না!!
স্পর্শ : আচ্ছা আমি এখনি আসছি তুমি ফোনটা রাখো!
স্পর্শ ফোনটা রেখে রুমের বাহিরে বের হতেই হীরা মনি তার পথ আটকে দাঁড়ায়
হীরা মনি : আমি সব শুনেছি স্পর্শ তুমি যাবে না শিশির তোমাকে ভালোবাসে না তোমার জীবনটা এ ভাবে নষ্ট করোনা শিশির তোমার সাথে প্রেমের নাটক করছে, আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি প্লীজ স্পর্শ তুমি যেওনা শিশির একটা মরিচিকার নাম,
স্পর্শ একটা ধাক্কা দিয়ে হীরা মনিকে ফেলে দিয়ে চলে যায়,
চলবে.......!!
Post a Comment